WHAT'S NEW?
Loading...
এই প্রতিবেদন একবার ভালো ভাবে পড়ে নেওয়ার পর, সিকিম বেড়াতে যাওয়ার আগে কারোর কোনোরকম সাহায্য আপনার লাগবে না।

আমাদের গ্রুপে প্রায়ই দেখি অনেকেই পোস্ট করেন সিকিম বেড়াতে যাবেন, কিন্তু কি ভাবে যাবেন, কোথায় কোথায় ঘুরবেন, ট্রাভেল প্লান কি হবে কিছুই জানা নেই। তাঁদের সকলের জন্যে এই পোস্ট। আজ ভাবলাম এই পোস্টটা করি যাতে গ্রুপের সদস্যরা সিকিম নিয়ে একটু আইডিয়া পান আর তা থেকেই নিজেরাই যাতে খানিকটা নিজের নিজের ঘোরার প্ল্যান করে নিতে পারেন। ঘুরতে যাচ্ছেন আপনি, সুতরাং ঘুরবেন নিজের ইচ্ছাই, ট্রাভেল প্লানও বানাবেন আপনি। আসলে আমি সেই দলের লোক যাঁরা কিনা বেড়াতে যাওয়ার আগে পড়াশুনো করেন, নিজের প্ল্যান নিজেই তৈরি করেন, আর নিজেই বুকিং করে ঘুরতে ভালোবাসেন। তাই আমিও চাই আপনারা সেইভাবেই ঘুরুন, দেখবেন ঘোরার মজা অনেক বেড়ে যাবে। তবে হ্যাঁ, কয়েকটি জায়গায় আপনাকে হয়তো ট্যুরিজম নিয়ে কাজ করেন এমন অভিজ্ঞ সৎ মানুষের সাহায্য নিতে হতে পারে।



সিকিম বেড়াতে যাওয়ার আগে কয়েকটি বিষয়ে অবগত হওয়ার প্রয়োজন, তাই সামান্য কয়কেটি টিপস্:

১. গ্যাংটকে পাবলিক প্লেসে স্মোকিং করলে জরিমানা দিতে হবে।
২. সিকিম হল গ্রীন এন্ড ক্লিন স্টেট, তাই যেখানে সেখানে থুতু ফেলা, চিপস্-এর প্যাকেট ফেলা ও নোংরা আবর্জনা ফেলা নিষিদ্ধ।

আরো কয়েকটি কথা:
আমার এই প্ল্যান ইন ডিটেল প্ল্যান নয়, ঘোরার ইচ্ছে উস্কে দিয়ে, কি ভাবে শুরু করবেন সেটা বাতলে দেয়ার জন্য। আমি আশা করবো আপনারা এই আইডিয়া থেকে নিজেদের প্ল্যান নিজেরাই বানিয়ে নিতে পারবেন। আর হ্যাঁ একটা কথা, গাড়ি রিজার্ভ করে ফ্যামিলি নিয়ে বেড়াতে যাওয়ার মতো প্ল্যান এটা, তাই কয়েকটি জায়গা ইচ্ছে করেই বাদ দিলাম। সাথে ট্রেক রুট গুলোও দিলাম না।

তাহলে শুরু করা যাক;

তো যে জায়গা নিয়ে কথা হচ্ছিল সেই সিকিম ঘোরার মধ্যে কয়েকটা ব্যাপার আছে। আসুন আগে আমরা জেনে নেই সিকিম এর ব্যাপারে, কয়েকটা তথ্য ও দ্রষ্টব্য স্থানগুলো। সিকিম এ মাত্র ৪ টি জেলা, আর নাম মনে রাখাও বেশ সোজা। উত্তর সিকিম, পূর্ব সিকিম, দক্ষিণ সিকিম আর .... বাকিটা আপনিই বলুন, এটাও আমাকে বলতে হবে? 
😄😄


চলুনএবার দেখে নেয়া যাক কোন জেলায় কি কি দেখার আছে।

উত্তর সিকিম:
সিঙ্গিক, লাচুং, ইয়ুমথাং, কাটাও (যদি মেলে পারমিশন), জিরো পয়েন্ট, লাচেন, গুরুদংমার লেক।

পূর্ব সিকিম:
ঋষিখোলা, আরিতার, জুলুক, নাথাং ভ্যালি, কুপুপ লেক, ওল্ড বাবা মন্দির, নাথুলা, ছাঙ্গু লেক, গ্যাংটক।

দক্ষিণ সিকিম:
নামচি, টেমি টি-গার্ডেন, সামদ্রূপটসে, রাবাংলা, রিনচেনপং, কালুক।

পশ্চিম সিকিম:
পেলিং, উত্তরে, সিংসর ব্রিজ, ইউকসম, কাঞ্চনজঙ্ঘা ফলস, খেছিপেরি লেক ইত্যাদি।

তাহলে এবার ছোট্ট করে প্ল্যান করে ফেলা যাক। সব প্ল্যান শুরু হচ্ছে NJP থেকে আর শেষও হচ্ছে NJP তেই। আপনি চাইলে NJP এর জায়গায় বাগডোগরা করে নিতে পারেন।


উত্তর সিকিম বেড়ানোর প্লান:

প্রথম দিন: NJP থেকে সোজা গ্যাংটক।

দ্বিতীয় দিন: গ্যাংটক থেকে লাচেন।

তৃতীয় দিনলাচেন থেকে গুরুদংমার লেক। সেখান থেকে ফিরে আসুন লাচুং-এ।

চতুর্থ দিনলাচুং থেকে ইয়ুমথাং ভ্যালী আর জিরো পয়েন্ট। সেখান থেকে লাচুং ও চুংথাং হয়ে গ্যাংটক ফিরে আসুন।

পঞ্চম দিন: গ্যাংটক থেকে NJP.

টিপস: চাইলে, চতুর্থ দিন গ্যাংটক ফিরে আসতে পারেন। সে অনুযায়ী প্ল্যান চেঞ্জ হবে।

কাটাও ভ্যালি যাবার পারমিশন পেলে তৃতীয় দিন আর চতুর্থ দিনের মাঝে আর এক দিন যোগ করুন, তৃতীয় দিনের দ্রষ্টব্য এর সাথে কাটাও যোগ করে নিন এবং রাতে লাচুং এ থাকুন, পরের দিন একেবারে লাচেন চলে যান।

শুধু ইয়ুমথাং ও জিরো পয়েন্ট বা শুধু গুরুদংমার ঘুরতে চাইলে প্রয়োজনীয় কাটছাট করে নিতে পারেন।

** মনে রাখবেন এই জায়গাগুলি খুব বিপদজনক সুতরাং শারীরিক কোনো সমস্যা হলে সাথে সাথে নীচে নেমে আসুন ঘোরার মায়া ত্যাগ করে মেডিক্যাল সাপোর্ট নিয়ে নিন। বয়স্ক ও বাচ্চাদের কিছু কিছু জায়গা যেমন গুরুদংমার বা জিরো পয়েন্ট না যাওয়াই ভালো। **

পূর্ব সিকিম বেড়ানোর প্লান:

#প্ল্যান_নং: ১
#প্রথম_দিন: NJP থেকে গ্যাংটক।

#দ্বিতীয়_দিন: গ্যাংটক ও তার আশেপাশের দ্রষ্টব্য স্থান ঘুরে দেখুন।

#তৃতীয়_দিন: ছাঙ্গু লেক ও নাথুলা আর সাথে বাবামন্দির ঘুরে আসুন।

#চতুর্থ_দিন: গ্যাংটক থেকে NJP

#টিপস: এই প্ল্যান এ আরো কয়েক টা দিন বাড়াতে চাইলে নামচি, রাবাংলা ও পেলিং জুড়ে নিন।



#প্ল্যান_নং: ২ (সিল্ক রুট প্লান)
#প্রথম_দিন: NJP থেকে ঋষিখোলা।

#দ্বিতীয়_দিন: ঋষিখোলা থেকে আরিতার দেখে চলে আসুন জুলুক।

#তৃতীয়_দিন: জুলুক থেকে নাথাং ভ্যালি ও কুপুপ লেক ওল্ড বাবা মন্দির দেখে ফিরে আসুন পদমচেন-এ।

#চতুর্থ_দিন: পদমচেন থেকে নীচে নামুন রোলেপে।

#পঞ্চম_দিন: রোলেপ থেকে NJP.



◆ প্ল্যান_নং: ৩
প্রথম দিনNJP থেকে ঋষিখোলা।

দ্বিতীয়_দিন: ঋষিখোলা থেকে আরিতার দেখে চলে আসুন জুলুক।

তৃতীয়_দিন: জুলুকেই একদিন কাটান। শীতকালে প্রচন্ড ঠান্ডা থাকে তাই লোয়ার জুলুক মানে পদমচেনে থাকুন।

চতুর্থ_দিন: জুলুক থেকে নাথাং ভ্যালি হয়ে কুপুপ লেক, নাথুলা, বাবামন্দির, ছাঙ্গু লেক দেখে গ্যাংটক।

পঞ্চম_দিনগ্যাংটক থেকে NJP

টিপস: চাইলে গ্যাংটক এ পরের দিন থেকে আশেপাশের দ্রষ্টব্য স্থানে বেড়াতে যান, মানে এক্ষেত্রে আরো এক দিন যোগ হবে।

** বয়স্ক দের না নিলেই ভালো হবে ৩ নং প্ল্যান এ। ১ নং ও ২ নং এর তেমন কোনো প্রবলেম নেই। সেক্ষেত্রে নাথুলা ও ছাঙ্গু লেকেও বয়স্কদের নিয়ে যেতে পারেন। তবে পাহাড়ি অঞ্চলে বেড়াতে গেলে শ্বাসকষ্ট বা বমি ভাব হবে, তাই কম পরিমানে খাবার খাবেন, জল বেশি করে খাবেন। এছাড়া রেগুলার মেডিসিন সবই নিতে থাকবেন।



দক্ষিণ ও পশ্চিম সিকিম প্লান:

দক্ষিণ আর পশ্চিম সিকিম এর জায়গা গুলো একসাথে ঘোরা যায়, আবার আলাদা ভাবেও ঘোরা যায়। আমি এখানে একসাথে মিক্স করে দিচ্ছি যাতে একবারে একটা সাইড কভার করে নিতে পারেন।

◆ প্ল্যান_নং:১
প্রথম_দিন: NJP থেকে নামচি যান। নামচি ঘুরে সেখান থেকে সামদ্রূপটসে দেখে টেমি টি গার্ডেন দেখে নিন। চলে আসুন রাবাংলা।

দ্বিতীয়_দিন: রাবাংলা ঘুরুন, ঘুরে আসুন রা-লং মনাস্ট্রি থেকে।

তৃতীয়_দিন: রাবাংলা থেকে রিনচেনপং।

চতুর্থ_দিন: রিনচেনপং ও কালুক এর আশেপাশে ঘুরুন। দেখে নিন পশ্চিম সিকিম এর কয়েকটি জায়গা যেমন সিংসর ব্রিজ, উত্তরে ও হি-বার্মিওক।

পঞ্চম_দিন: রিংচেনপং থেকে NJP


◆ প্ল্যান_নং: ২
প্রথম_দিন: NJP থেকে পেলিং যান।

দ্বিতীয়_দিন: পেলিং থেকে খেছিপেরি লেক দেখুন, তারপর কাঞ্চনজঙ্ঘা ফলস্ দেখে ইউকসম্ আসুন। রাতে আবার পেলিং।

তৃতীয়_দিন: পেলিং থেকে রাবাংলা চলে যান পেমায়াঙটসে মনাস্ট্রি দেখে, অথবা পেলিং থেকে সিংসর ব্রিজ, উত্তরে ও হি-বার্মিওক দেখে রিনচেনপং চলে আসুন।

চতুর্থ_দিন: রিনচেনপং থাকলে NJP ব্যাক করুন, রাবাংলা থাকলে রাবাংলা ও রালং ঘুরুন। এক্ষেত্রে তার পরের দিন NJP ব্যাক করবেন।

■ কোন_সময়_যাবেন?

উত্তর সিকিম যাওয়ার সময় হল সেপ্টেম্বরের শেষ থেকে নভেম্বর এবং ফেব্রুয়ারীর শেষ থেকে মে। এর আগে-পরে গেলে বরফে বা বর্ষায় রাস্তা বন্ধ থাকার সম্ভাবনা থাকবে। উত্তর সিকিম খুব ধস প্রবন এলাকা, তাই বছরের যে কোনো সময়ই রাস্তা বন্ধ থাকতে পারে। দক্ষিণ ও পশ্চিম সিকিম সারা বছরই যাওয়া যায়, তবে বর্ষায় কোনো কোনো জায়গায় যেতে সমস্যা হতে পারে। পূর্ব সিকিম এ জুলুক ও নাথাং ভ্যালি এবং ছাঙ্গু লেক তৎসহ বাবামন্দির/নাথুলা যেতে গেলে সেপ্টেম্বরের শেষ থেকে নভেম্বর এবং ফেব্রুয়ারীর শেষ থেকে মে এর মধ্যে যাওয়াই ভালো। গ্যাংটক যে কোনো সময় ই যাওয়া যায়। তবে এইসব পাহাড়ি অঞ্চলে বর্ষার 3 মাস পর্যটক খুব কমই যান। জুন, জুলাই ও আগস্ট এই তিন মাস প্রচন্ড বৃষ্টি হয়, বেড়ানোর মজা চলে যায়। তাই এই তিন মাস সেরা সময় নয়।

● কোথায়_থাকবেন?
বাজেট ও ট্রাভেল প্লান অনুযায়ী আপনি প্রতিটি পর্যটন কেন্দ্রে থাকার জন্যে, খাওয়ার জন্যে নানারকম অপশন পেয়ে যাবেন। কোথাও হোটেল পাবেন তো কোথাও কোথাও হোমস্টেও পাবেন। আপনার রুচি ও বাজেট অনুসারে নিজেই গুগল সার্চ করে রিভিউ দেখে ছবি দেখে সিলেক্ট করে নেবেন। আমি এই মুহূর্তে কোনো হোটেল বা হোমস্টের নাম উল্লেখ করছি না, আপনারা স্পট বুকিং বা অগ্রিম বুকিং প্রয়োজন মত করে নিতে পারবেন এটা বিশ্বাস করি।

◆ কিভাবে_যাবেন?

★ বিমান_মাধ্যমে:
গ্যাংটকের কাছে সিকিমের একমাত্র বিমানবন্দর পাকইয়োং বিমানবন্দর চালু হয়েছে যা সবচেয়ে নিকটবর্তী। কলকাতা থেকে সিকিমের ফ্লাইট চালু হলেও বেশিরভাগ সময়েই ফ্লাইট ক্যান্সেল হয়ে যায়, তাই বাগডোগড়া বিমান বন্দর হয়ে আসায় শ্রেয়। বিমানবন্দরটি গ্যাংটক থেকে ১২৬ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত এবং গাড়ি বুক করে গেলে পৌঁছাতে প্রায় ৪ ঘন্টা মত সময় লাগবে। কখনও কখনও এর চেয়েও বেশি সময় লাগতে পারে।

★ রেল_মাধ্যমে
গ্যাংটকের নিকটবর্তী রেলওয়ে স্টেশন হল শিলিগুড়িতে অবস্থিত নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশন (NJP)। স্টেশনটি গ্যাংটক শহর থেকে প্রায় ১২০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। গাড়ির মাধ্যমে ৪ ঘন্টার মধ্যে পৌঁছানো যেতে পারে।

মোটামুটি একটা আইডিয়া তো আশা করি পেয়ে গেলেন, তাহলে করোনা পরিস্থিতি সব স্বাভাবিক হলে করে ফেলুন নিজের প্ল্যান নিজেই। মন যেরকম চায় সেই মতো পরিকল্পনা করবেন, এছাড়া অন্য কোনো সাহায্য লাগলে বাঙালির বেড়ানো গ্রুপ আপনাদের জন্য সর্বদা আছে।


এই মুহূর্তে এই পোস্ট শুধুমাত্র আপনাদের নলেজ বাড়ানোর জন্যেই দেওয়া হলো। পরিস্থিতি স্বাভাবিক যত দিন না হচ্ছে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বেড়াতে যাবেন না। তবে এও আশা করি যে সবকিছু আবার পূর্বাবস্থায় খুব শীঘ্রই ফিরে আসবে, সবাই মিলে ঈশ্বরের কাছে এই প্রার্থনায় করি।

এই পোস্টটি খুবই কাজের তাই অবশ্যই এইটা সবার সাথে শেয়ার করুন। আপনারা অনেকেই  WhatsApp বা  Telegram-এ বিভিন্ন গ্রুপে আছেন, সেইসব গ্রুপেও শেয়ার করতে পারেন।

©বাঙালির বেড়ানো।
কেদারনাথ ও বদ্রিনাথ নিয়ে সমস্ত তথ্য এর আগে আপনারা হয়তো কোথাও পাননি। আপনাদের সুবিধার্থে বাঙালির বেড়ানো গ্রুপে এই প্রথম সব খুঁটিনাটি বিষয় নিয়ে আলোচনা করা হলো। তবুও যদি আপনার মনে আরও কিছু প্রশ্ন থাকে অবশ্যই কমেন্ট করে জানাবেন।


কেদারনাথ ও বদ্রিনাথ এই ট্যুরে আমি বিশেষ করে বয়স্ক মানুষদের জন্যেই একটা ট্রাভেল প্লান দেওয়ার চেষ্টা করছি। একটু আরামে ঘুরে বেড়াতে চাইলে এই প্লানে যেতে পারেন। হয়তো এতে খরচ তুলনামূলক ভাবে একটু বাড়বে, তবে আরামদায়ক ভাবে ঘুরলে সময় ও অর্থ একটু তো খরচ করতেই হবে। আসলে বয়স্ক মানুষদের কাছে কেদারনাথ, বদ্রিনাথ দর্শন জীবনের সবচেয়ে আকাঙ্খিত একটা ট্যুর বলতে পারেন। তাই খরচ সামান্য একটু বেশি হলেও এই প্লানে আপনাদের শারীরিক কষ্ট অনেকটাই কম হবে।


আর সস্তায় ট্যুর করতে হলে যাঁরা চারধাম গ্রুপ ট্যুর করান, তাঁদের সাথে গ্রুপে যেতে পারেন। এতে অনেক জায়গায় এডজাস্ট করতে হবে সাথে জার্নিও বেশ খানিকটা বেশি হবে। এই গ্রুপ ট্যুর গুলিতে দিন সংখ্যা কমিয়ে খরচ কমানো হয়। তাই প্রতিদিনই 7/8 ঘন্টা পাহাড়ি রাস্তায় জার্নি করতে হয়। তবে সস্তায় কিভাবে ঘুরবেন সেই প্লান না হয় আরেকদিন দিয়ে দেব। এখন আমি আমার মত করে একটা প্লান দিচ্ছি। দেখুন এই ট্রাভেল প্লান আপনাদের কাজে লাগে কিনা?

কিভাবে যাবেন: কেদারনাথ ও বদ্রিনাথ ধাম বেড়াতে যেতে হলে জার্নি শুরু করতে হয় হরিদ্বার বা দেরাদুন থেকে।

ট্রেন: কলকাতা থেকে হরিদ্বার পৌঁছাতে ট্রেনে প্রায় 27 ঘন্টা সময় লাগে, তবে সবচেয়ে কম সময়ের ভালো ট্রেন বলতে উপাসনা এক্সপ্রেসই বেস্ট। এছাড়া কলকাতা থেকে ট্রেনে দিল্লি হয়ে সেখান থেকে হরিদ্বার গাড়িতে বা ট্রেনে যেতে পারেন।

বিমানে: আবার কলকাতা থেকে সরাসরি বিমানে দেরাদুন পৌঁছে সেখান থেকেও জার্নি শুরু করতে পারেন।

কলকাতা থেকে বিমানে দিল্লি: ভাড়া: 3000/- -3500/- টাকা (মাথাপিছু)।

কলকাতা থেকে বিমানে দেরাদুন: ভাড়া: 5000/- -6000/- টাকা (মাথাপিছু)।

কলকাতা থেকে হরিদ্বার: ট্রেনের টিকিট - 3 AC : 1735/- টাকা (মাথাপিছু)।

দিল্লি থেকে হরিদ্বার যাওয়ার ট্রেন ও গাড়ি দুই রকম ব্যবস্থাই আছে। ট্রেনে গেলে কিছুটা সস্তা হবে তবে 6 জনের টিম থাকলে একটি বড় গাড়িতে 1000/- টাকা মাথাপিছু খরচ হবে।

এবারে আসি ট্রাভেল প্লান নিয়ে; আমি এই প্লান হরিদ্বার থেকে শুরু করে হরিদ্বারে শেষ করবো। কলকাতা থেকে হরিদ্বার যাওয়া আসা আপনারা হিসাব করে নেবেন। কারণ কে কোন মাধ্যমে হরিদ্বার পৌঁছাবেন সেটা তাঁদের নিজস্ব।

প্রথম দিন: হরিদ্বার থেকে গুপ্তকাশি (208 কিমি - সময় লাগবে 6 ঘন্টা থেকে 7 ঘন্টা মত)। রাত্রি বাস গুপ্তকাশি তেই।

দ্বিতীয় দিন: গুপ্তকাশি থেকে শোনপ্রয়াগ (30 কিমি- সময় লাগবে 1 ঘন্টা 30 মিনিট), সেখান থেকে শেয়ার গাড়িতে গৌরিকুন্ড। এই গৌরিকুন্ড থেকেই কেদারনাথ ট্রেক শুরু হবে। গৌরিকুন্ড থেকে কেদারনাথ মন্দিরের দূরত্ব এখন প্রায় 23 কিমি এবং একজন সুস্থ সবল মানুষ এই রাস্তা 7 থেকে 8 ঘন্টায় অতিক্রম করে থাকেন।

এই রাস্তায় ট্রেক যাঁরা করতে পারবেন না, তাঁরা ঘোড়া বা ডুলির সাহায্য নিতে পারেন। খরচ মাথাপিছু 3000/- -4500/- টাকা।

তবে বয়স্ক মানুষদের ক্ষেত্রে এই দুটোই বেশ কষ্টদায়ক। তাই আমার পরামর্শ আপনারা যাঁরা একটু খরচ করতে সক্ষম তাঁরা জনপ্রতি 6000/- টাকা খরচ করে হেলিকপ্টার সার্ভিস নিতে পারেন। হেলিকপ্টার পাওয়া যাবে ফাটা ও সেরসি থেকে, যদিও গুপ্তকাশি থেকেও হেলিকপ্টার পাওয়া যায়, তবে তাতে খরচ আরেকটু বাড়বে।


এবারে যাঁরা হেলিকপ্টারে যাবেন তাঁরা সেইদিনই ফিরে না এসে পরের দিন ফিরে আসবেন। এমন ভাবেই হেলিকপ্টারের টিকিট অগ্রিম কেটে নেবেন। এর জন্যে অনেকগুলি কোম্পনি আছে আর তাঁরা সকলেই অনলাইনে বুকিং দিয়ে থাকেন। এই মূহুর্তে যদিও কোভিদের জন্যে হেলিকপ্টার বুকিং বন্ধ আছে, তবে আশা করছি কয়েকদিন পরে হয়তো তা অনলাইনে পাওয়া যাবে। অনলাইনে বুকিং করার জন্যে যে ওয়েবসাইট সেটা হলো: https://heliservices.uk.gov.in

অনেকেই বলেন পুজোর সময় হেলিকপ্টারের টিকিট খুব সহজেই স্পটে পৌঁছে পাওয়া যায়, তবে সেটা সবসময় নিশ্চিত নয়, হয়তো কখনও কয়েক ঘন্টা অপেক্ষা করতে হবে। তাই আমার পরামর্শ হেলিকপ্টারের টিকিট অগ্রিম বুকিং করে যাওয়ায় ভালো।

এইদিন রাত্রিবাস কেদারনাথ মন্দিরের কাছের কোনো হোটেলে, লজে বা আশ্রমে। এক্ষেত্রে GMVN এর ট্যুরিস্ট রেস্ট হাউস (TRF), GMVN কটেজ ও টেন্ট সব রকম ব্যবস্থায় আছে।

তৃতীয় দিন: কেদারনাথ মন্দির দর্শন করে ফিরে আসবেন সিতাপুরে। যাঁরা ট্রেক করে উঠবেন বা নামবেন তাঁরা সেইদিন সিতাপুরেই রাত্রিবাস করবেন। সিতাপুরে অনেক হোটেল আছে, গাড়ি ওয়ালাকে বললে সেই কোনো না কোনো হোটেলে নিয়ে যাবেন। এক্ষেত্রে অনলাইনে আগে থেকে কিছু হোটেলের নাম দেখে রাখতে পারেন। আর যাঁরা হেলিকপ্টারে ফিরবেন তাঁরা গাড়ি নিয়ে এগিয়ে চলুন 65 কিমি দূরের চোপতা ভ্যালির দিকে। চোপতা ভ্যালির কিছুটা আগে বানিয়াকুণ্ডে থাকুন, কারণ এখানে যেসব টেন্ট আছে সেগুলো তুলনামূলক ভাবে চোপতার থেকে কিছুটা ভালো পরিষেবা যুক্ত। তবে রেট প্রায় 1500/- -1800/- টাকা মাথাপিছু (থাকা ও খাওয়া সমেত - নিরামিষ খাবার)। তাই আমার পরামর্শ চোপতা থেকে আধা ঘন্টা আগে বানিয়াকুণ্ডে টেন্ট হাউসে রাত্রি যাপন করুন।

একটা কথা বলে রাখি উত্তরাখন্ডেই চোপতা বলে দুটি জায়গা আছে, তবে আমরা চোপতা মিনি সুইজারল্যান্ড নামে যেটি পরিচিত, সেই জায়গায় যাবো। এইখান থেকেই 3.5 কিমি ট্রেক করে দেখে নিতে পারেন পঞ্চ কেদার এর একটি তুঙ্গনাথ মন্দির। খুব বয়স্ক বা হাঁটুর খুব ব্যাথা আছে এমন কেউ তুঙ্গনাথ না যাওয়ায় ভালো। উঠা নামা নিয়ে এই ট্রেক করতে মন্দির দর্শন করতে প্রায় সাড়ে চার থেকে 5 ঘন্টা সময় লাগবে। তাই বানিয়াকুন্ড থেকে খুব সকালে বেড়িয়ে পড়তে হবে। টেন্ট হাউস অনলাইনে দেখে বুক করতে পারেন।

চতুর্থ দিন: যাঁরা সিতাপুরে আগের রাত্রে ছিলেন তাঁরা গাড়ি নিয়ে বেড়িয়ে পড়বেন 180 কিমি দূরের জসিমঠের উদ্দেশ্যে, সময় লাগবে গাড়িতে 7 ঘন্টা মত। আর যাঁরা তুঙ্গনাথ দেখতে যাবেন যাঁরা আগের দিন বানিয়াকুণ্ডে রাত্রি যাপন করছেন তাঁরা 100 কিমি দূরের জসিমঠে পৌঁছাবেন, সময় লাগবে প্রায় সাড়ে 4 ঘন্টা। রাত্রিবাস জসিমঠে। এখানেও GMVN এর দুটি রেস্ট হাইস আছে। এই জায়গায় বুক করতে পারেন। থাকার খরচ অন্যান্য হোটেলের তুলনায় একটু বেশি। তবে এখানে আরও অনেক বেসরকারি হোটেল পেয়ে যাবেন।

পঞ্চম দিন: জসিমঠ থেকে বদ্রিনাথ মন্দির যাওয়া। দূরত্ব প্রায় 50 কিমি সময় লাগবে প্রায় আড়াই ঘণ্টা মত। সেইদিন বদ্রিনাথ মন্দির দর্শন করুন আর আশে পাশে হেঁটে ঘুরে বেড়ান। রাত্রিবাস বদ্রিনাথে, এখানেও GMVN REST হাউস ছাড়াও অনেক ছোট বড় হোটেল পেয়ে যাবেন।


ষষ্ঠ দিন: বদ্রিনাথ থেকে মানা গ্রাম ঘুরে আসুন। স্বরস্বতী নদীর উৎসস্থল বেশ দেখার মত একটি জায়গা। এই মানা গ্রাম যাওয়ার রাস্তা অপূর্ব সুন্দর তাই এটা মিস করবেন না। এটি ভারত ও চীন সীমানার সবচেয়ে শেষ গ্রাম। আজও রাত্রিবাস বদ্রিনাথেই।

সপ্তম দিন: বদ্রিনাথ থেকে আউলি (Auli) যান, দূরত্ব 55 কিমি, সময় লাগবে প্রায় তিন ঘন্টা। এই আউলি জায়গাটিও পাহাড় প্রেমীদের কাছে অসম্ভব সুন্দর লাগবে। GMVN SKI RESORT এ বুকিং করতে পারেন। এই রিসোর্ট পর্যন্ত গাড়ি পৌঁছে যাবে। আউলি জায়গাটিও অপশনাল, আপনার ট্রাভেল লিস্টে নাও রাখতে পারেন, সেক্ষেত্রে বদ্রিনাথ থেকে সোজা কর্ণপ্রয়াগ বা রুদ্রপ্রয়াগে থাকুন। কর্ণপ্রয়াগ ও রুদ্রপ্রয়াগ এই দুই জায়গায় GMVN রেস্ট হাইস পেয়ে যাবেন। বদ্রিনাথ থেকে কর্ণ প্রয়াগ এর দূরত্ব 122 কিমি, সময় লাগবে 5 ঘন্টা মত। আর রুদ্রপ্রয়াগ 154 কিমি সময় লাগবে 6 ঘন্টা মত।

অষ্টম দিন: আউলি থেকে চলে আসুন কর্ণপ্রয়াগে, দূরত্ব 91 কিমি, সময় লাগবে 4 থেকে সাড়ে চার ঘণ্টা। রাত্রিবাস কর্ণপ্রয়াগে নদীর ধারের GMVN রেস্ট হাউসে।

নবম দিন: কর্ণপ্রয়াগ থেকে দেবপ্রয়াগ। অলকানন্দা ও ভাগীরথীর মিলন স্থল এটি তাই এই জায়গায় প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্য অকল্পনীয়। দূরত্ব প্রায় 100 কিমি এবং সময় লাগবে সাড়ে 3 ঘন্টা মতন। রাত্রিবাস দেবপ্রয়াগে। যদিও দেব প্রয়াগে না থেকে সরাসরি ঋষিকেশ বা হরিদ্বার ফিরতে পারেন। কৰ্ণ প্রয়াগ থেকে ঋষিকেশের দূরত্ব 172 কিমি, সময় লাগবে 6 ঘন্টা মত।

দশম দিন: দেবপ্রয়াগ থেকে ঋষিকেশ বা হরিদ্বারে চলে আসুন। দূরত্ব ঋষিকেশ পর্যন্ত 75 কিমি আর হরিদ্বার 95 কিমি সময় লাগবে 3 থেকে সাড়ে 3 ঘন্টা। ঋষিকেশ বা হরিদ্বার পৌঁছে সন্ধ্যায় গঙ্গা আরোতি দেখুন একটু কেনাকাটা করুন আর সেই রাত্রি ওখানেই কাটান।

হরিদ্বার থেকে ট্রেনে কলকাতার উদ্দেশ্যে রওনা হন। আর যাঁরা বিমানে ফিরবেন তাঁরা দেরাদুন এয়ারপোর্ট চলে যান।

থাকবেন কোথায়: এই পুরো ট্যুরে থাকার জন্যে GMVN (গাড়োয়াল মন্ডল বিকাশ নিগম) এর রেস্ট হাউস আমার মতে সবচেয়ে ভালো।খরচ হয়তো একটু বেশি তবে পরিষেবা তুলনামূলক ভাবে খুব ভালো। অনলাইনে ও কলকাতার অফিস থেকে অফলাইনে এগুলি বুকিং হয়। তাই আপনার পছন্দ মত রুম সিলেক্ট করে বুকিং করে নিতে পারেন।

আমার মনে হয়, গাড়ি নিয়ে প্রত্যেক দিন হোটেল খোঁজার চেয়ে অগ্রিম বুকিং থাকলে আনন্দের সাথে ঘুরতে পারবেন। এই GMVN এর রেস্ট হাইসগুলিতে কোনো জায়গায় ECONOMY ক্লাসে 1000/- -1600/- টাকা আবার কোথাও 2750/- টাকায় সেমি ডিলাক্স বা ডিলাক্স রুম পাবেন। যদিও সুপার ডিলাক্স চাইলে আরও বেশি খরচ লাগবে। অর্থাৎ অনেক রকম রুম আছে সেগুলি একটু দেখে নিয়ে তবেই বুক করুন।



আর SOLO ট্রাভেলার দের জন্যে তো GMVN এর ডর্মিটোরি সবচেয়ে ভালো ও সস্তা, 300/- -400/- টাকা মাথাপিছু খরচে একটি করে সিঙ্গল বেড পেয়ে যাবেন। যাঁরা ফ্যামিলি নিয়ে ডর্মিটোরি তে থাকতে চান, সেটাও সম্ভব কোনো সমস্যা নেই, সব জায়গায় মহিলা পুরুষ আলাদা আলাদা রুমে থাকতে হবে।

এই GMVN এর আরেকটা সুবিধা হলো এইখানে নিজস্ব রেস্টুরেন্ট আছে আর রিজনেবল্ প্রাইসে ভালো খাবার পাওয়া যায়। বাইরে খেলে খরচ হয়তো একটু কমবে তবে খাবারের কোয়ালিটি সব জায়গায় ভালো পাবেন না। GMVN এর রেস্ট হাউসগুলিতে বিশেষ বিশেষ রুমে গিজারও পেয়ে যাবেন।

এছাড়াও প্রত্যেকটি জায়গায় বেসরকারি হোটেল, লজ্ ও আশ্রম আছে, সেগুলো স্পটে গিয়ে খোঁজ নিয়ে দেখতে হবে।

গাড়ি: ভালো গাড়ি পেয়ে যাবেন হরিদ্বার থেকেই। হরিদ্বারে প্রচুর ট্রান্সপোর্ট এর অফিস আছে, গাড়ি দেখে দরদাম করে গাড়ি নিতে পারেন। ইনোভা জাতীয় গাড়িতে দিন পিছু 3500/- টাকা খরচ আছে।গাড়ি চলুক বা না চলুক যতদিনের ট্যুর থাকবে, দিন হিসাবে গাড়ির ভাড়া দিয়ে যেতে হবে। শেয়ার গাড়িও পাওয়া যায়, তবে সেটা আরামদায়ক হবে না। সরকারি বাসও সব জায়গায় পাবেন না।



কি কি দেখবেন:
এই ট্রাভেল প্লানে কেদারনাথ বদ্রিনাথ বাদে পঞ্চপ্রয়াগ দেখার সুযোগ থাকছে।

প্রথম: দেবপ্রয়াগ - ভাগীরথী ও অলোকানন্দা নদীর সঙ্গম স্থল। এটি যাবার পথেই দেখে নিতে পারেন, তবে ফেরার পথে একরাত্রি থাকলে ভালো লাগবে।

দ্বিতীয়: রুদ্রপ্রয়াগ - অলোকানন্দা ও মন্দাকিনী নদীর সঙ্গমস্থল, এটিও কেদারনাথ যাবার পথে এই জায়গাটি দেখতে পাবেন। এখানে থাকার প্রয়োজন নেই। তবে কেউ চাইলে থাকতেই পারেন, সেটাও ফেরার পথে।

তৃতীয়: কর্ণপ্রয়াগ - এটি অলোকানন্দা ও পিন্ডার নদীর মিলনস্থল। বদ্রিনাথ থেকে ফেরার পথে একদিন থাকতে পারেন।

চতুর্থ: নন্দপ্রয়াগ - অলোকানন্দা ও নন্দাকিনী নদীর সঙ্গমস্থল। এই জায়গাটি ফেরার পথে দেখতে পাবেন।

পঞ্চম: বিষ্ণুপ্রয়াগ - অলোকানন্দা ও ধৌলিগঙ্গা নদীর সঙ্গমস্থল। এই জায়গাটিও অসম্ভব সুন্দর। এটি পাবেন জসিমঠ থেকে বদ্রিনাথ যাবার রাস্তায়। কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে এই অপরূপ প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের রসাস্বাদন করতেই পারেন।

এবারে আসি পঞ্চ কেদারের কোনটি কোনটি আপনারা দেখতে পাবেন: পঞ্চ কেদার হল: কেদারনাথ, তুঙ্গনাথ, রুদ্রনাথ, মধমহেশ্বর ও কল্পেস্বর। এই পাঁচটি কেদার এর মধ্যে এই ট্যুরে কেদারনাথ ও তুঙ্গনাথ দেখার সুযোগ থাকছে। তবে অন্য কেদারগুলি দেখতে হলে আবার অন্য প্লান করে আসতে হবে। কারণ প্রত্যেকটি মন্দিরের কাছে পৌঁছাতে হলে অনেকটা পথ হেঁটে উঠতে হবে। তাই একবারে সব কেদার দেখা সম্ভব নয়, এই যাত্রায় যতটুকু দেখা সম্ভব পুরোটাই জানিয়ে দিলাম।




বেড়ানোর সেরা সময়: অক্টোবর থেকে নভেম্বর দীপাবলি পর্যন্ত।

এই প্রতিবেদন কেমন লাগলো জানাবেন। বাঙালির বেড়ানো গ্রুপের সদস্যদের জন্যেই এই প্রতিবেদন। ভালো লাগলে অবশ্যই নিজের নিজের টাইমলাইনে শেয়ার করবেন। কেউ কপি পেস্ট করবেন না। চুরি করে অন্য গ্রুপে লেখা দিলে বাঙালির বেড়ানো গ্রুপ আপনাকে ব্লক করে দেবে। তাই দয়া করে লেখক কে সম্মান জানিয়ে শেয়ার করুন, কপি পেস্ট নয়।

কলমে: উৎপল নাগ।
©বাঙালির বেড়ানো।
আন্দামান যাবেন, কিভাবে যাবেন, কত খরচ, কোথায় কতদিন থাকবেন, সব তথ্য একটি প্রতিবেদনে।

ভাবছেন আন্দামান যাবো, কিন্তু সবকিছু নিজেই বুক করবেন, কোনো চিন্তা নেই, আজকের এই প্রতিবেদন পুরোটা পড়ে নিলে আপনার আন্দামান ট্যুর নিয়ে আর কাউকে কোনো কথা জিজ্ঞেস করার প্রয়োজন হবে না। আপনাদের মনে যত রকম প্রশ্ন জাগতে পারে সেই সব প্রশ্নের উত্তর নিয়ে আমার এই প্রতিবেদন।


প্রশ্ন: আন্দামান যেতে কত খরচ পড়বে?
উত্তর: ধরুন একজন দম্পতি নিজেরাই সব বুক করলো, তবে মাথাপিছু খরচ বিমান বাদে 18000/- টাকার মত লাগবে।


প্রশ্ন: আন্দামান নিয়ে একটু বিস্তারিত জানাবেন?
উত্তর: অবশ্যই জানাবো। আন্দামান তিনটি অংশে বিভক্ত। নর্থ আন্দামান, মিডল্ আন্দামান ও সাউথ আন্দামান। এর মধ্যে সাধারণ পর্যটকরা সাউথ ও মিডল্ আন্দামান ঘুরে থাকেন।


প্রশ্ন: আন্দামান কি বিমানে করেই যেতে হবে?
উত্তর: বিমান ছাড়াও জাহাজে করেও যাওয়া যায়, তবে জাহাজে করে যাওয়ার চেষ্টা না করায় ভালো, বিমানে যাওয়ায় বেস্ট। তবে জাহাজে বেড়ানোর অনুভূতি আপনি আন্দামান গিয়ে পেয়ে যাবেন।



প্রশ্ন: আন্দামান ট্যুরের ডিটেইলস জানার আগে একটু জানান ওখানে কি কি দ্বীপ (Island) আছে যেখানে আমরা ঘুরতে যেতে পারবো?
উত্তর: বিশেষ করে হ্যাভলক দ্বীপ ও নীল দ্বীপ সবার পছন্দের। এই দুটি জায়গাতেই থাকতে হবে। তবে পোর্ট ব্লেয়ার (আন্দামানের রাজধানী) থেকেও Ross Island, North Bay Island, Viper Island ও Bara tang Island ঘুরতে পারবেন।



প্রশ্ন: মোট কতদিনের ট্যুর করতে হবে?
উত্তর: সবচেয়ে কম 5 রাত্রি 6 দিনের এই ট্যুর হবে। তবে 6 রাত্রি 7 দিন হলে মোটামুটি ঘুরে ভালো লাগবে, প্রায় সব জায়গায় কভার হয়ে যাবে।



প্রশ্ন: ট্যুর ডিটেইলস একটু জানাবেন?
উত্তর: আমি 5 রাত্রি 6 দিনের একটি ট্রাভেল প্লান সাজিয়ে দিচ্ছি :
Day:1- কলকাতা থেকে ভোরের বিমান ধরে পোর্ট ব্লেয়ার পৌঁছান। বিমান বন্দর থেকে হোটেল, ফ্রেশ হয়ে লাঞ্চ সেরে সোজা সেলুলার জেল পরিদর্শন (সময় লাগবে 2 ঘন্টা মত), তারপর চলে যাবেন Corbyn Cove Beach (সূর্যাস্ত পর্যন্ত থাকবেন)। সেখান থেকে আবার সেলুলার জেলের Light & Sound show দেখে হোটেলে ফেরা। আজই একটা গাড়ির সাথে কথা বলে রাখবেন যাতে পরের দিন খুব সকালে আপনারা হোটেল থেকে Phoenix Bay Jetty পৌঁছাতে পারেন (বলে রাখি এই জেটি থেকেই সবরকম ফেরি আপনাদের ধরতে হবে) ।



Day:2- হোটেল থেকে বেরিয়ে সকাল 6 টার আগে পৌঁছাবেন Phoenix Bay Jetty তে যেখান থেকে Cruise আপনাকে নিয়ে যাবে হ্যাভলক দ্বীপে। এই Cruise নিয়ে বিস্তারিত পরে জানাচ্ছি। হ্যাভলক দ্বীপে 4 টি দেখার মত বিচ আছে।
1. বিজয়নগর বিচ ।
2. রাধানগর বিচ।
3. এলিফ্যানটা বিচ।
4. কালা পাত্থর বিচ।
হ্যাভলক পৌঁছে হোটেলে গিয়ে একটু খাওয়া দাওয়া করে একটি স্কুটি বা গাড়ি বুক করে এক এক করে ঘুরে নিন এই চারটি বিচ। এইখানে আছে এলিফ্যানটা বিচ Scuba Diving বা Snorkeling করে নিতে পারেন। এর কারণ এই জায়গার জল খুব পরিষ্কার ও স্বচ্ছ। এরপর দেখুন কালাপাত্থর বিচ ও সবশেষে রাধানগর বিচ। এই রাধানগর বিচ পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ কয়েকটি বিচের তালিকায় আছে, তাই বুঝতেই পারছেন এইখানেই বেশিরভাগ সময়টা কাটান। আর বিজয়নগর বিচ হলো আপনার হোটেলের কাছের বিচ তাই এটা পায়ে হেঁটেই ঘুরতে পারবেন, সেটা সন্ধ্যের পরেও। তাই রাধানগর বিচে আলাদা করে ঘুরতে হবে না। এইখানেই অপনাদের হোটেল নেওয়ার চেষ্টা করবেন।



Day: 3 - এইদিন হ্যাভলক থেকে নীল দ্বীপে পৌঁছাতে হবে, এর জন্যে বেসরকারি Cruise আছে। এই দ্বীপে পৌঁছে থাকবেন ভরতপুর বিচের কাছেই। তবে এই দ্বীপ হ্যাভলক দ্বীপের থেকে একটু সস্তা। এখানে গিয়ে একটি সাইকেল বা স্কুটি ভাড়া করে ঘুরে নেবেন লক্ষণপুর বিচ, সিতাপুর বিচ ও রামনগর বিচ। স্কুটি ছাড়াও ঘোরার জন্যে গাড়ি পেয়ে যাবেন। তবে ভরতপুর বিচ যেখানে হোটেল নেবেন সেখানেই সবচেয়ে বেশি সময় কাটাবেন, ওটা সবচেয়ে ভালো ও সুন্দর বিচ।



Day: 4- এই দিনে নীল দ্বীপ থেকে আবার পোর্ট ব্লেয়ারে ফেরার পালা। পোর্ট ব্লেয়ার ফিরতে ফিরতে সকাল 10 টা হয়ে যাবে। এরপর হোটেলে গিয়ে লাঞ্চ সেরে বেরিয়ে পড়ুন পোর্ট ব্লেয়ারের রাজীব গান্ধী ওয়াটার কমপ্লেক্স সেখানে কিছু ওয়াটার এক্টিভিটি করতে পারেন। এরপর দেখুন Samudrika Marine Museum  Zonal Anthropological Museum..



Day: 5 - হোটেল থেকে বেরিয়ে Phoenix Bay Jetty পৌঁছে ওখানে একটি প্যাকেজ বুক করুন। অনেক রকম প্যাকেজ থাকলেও জনপিছু 500/- টাকা মূল্যের 3 টি Island (Including Lunch) এই প্যাকেজ নেওয়ায় সবচেয়ে বুদ্ধিমানের কাজ হবে। এক্ষেত্রে আপনি দেখবেন Ross Island, North Bay Island ও Viper Island.....এই প্যাকেজে আপনি একটি সুন্দর Coral Viewing Glass Boat - এ চড়তে পারবেন। সন্ধ্যে বেলায় আবার পোর্টব্লেয়ার ফিরে ওখানেই হোটেলে থাকুন। আশে পাশে ঘুরে দেখুন আর কিছু কেনাকাটি করার হলে করুন। তবে সমুদ্র থেকে Dead coral বা কোনোরকম কিছু নিয়ে আসবেন না। এতে এয়ারপোর্টে আপনাকে ধরবে, সমুদ্র থেকে সরাসরি কোনোকিছু তুলে আনা বেআইনি। তবে গিফট হিসাবে যা কিছু কিনবেন সবগুলির বিল অবশ্যই নিয়ে নেবেন।



Day: 6 - আজ পোর্ট ব্লেয়ার থেকে কলকাতা ফেরার পালা। তবে কেউ যদি আরেকটি দিন পোর্ট ব্লেয়ারে থাকেন তাহলে Baratang Island ঘুরে আসতে পারবেন। এটি মিডল্ ও নর্থ আন্দামানের মাঝের একটি দ্বীপ। এখানে জারোয়া উপজাতি দেখার সুযোগ থাকছে। আর প্রাকৃতিক সৌন্দর্য অসম্ভব সুন্দর। আমার মতে একটা দিন আরও থেকে Baratang ঘুরে আসা উচিত। তবে এর জন্যে মাথাপিছু খরচ বেড়ে যাবে।


প্রশ্ন: এবারে বলুন ওখানে যাওয়ার জন্যে বিমানের খরচ কত?
উত্তর: এই মুহূর্তে কলকাতা থেকে পোর্ট ব্লেয়ার যাওয়া আসা মিলিয়ে মাথাপিছু টিকিট এর খরচ 10,000/- টাকার মত। এই ভাড়া সিজন অনুযায়ী কম বেশি হয়ে থাকে।
প্রশ্ন: পোর্ট ব্লেয়ারে হোটেলের খরচ কেমন?
উত্তর: একটু ভালো ও পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন হোটেল নিতে হলে প্রতিটি জায়গায় 2000/- টাকা মত ধরতে হবে। এর মানে একটি রুমে 2 জন থাকলে এই খরচ অর্ধেক হয়ে যাবে।
প্রশ্ন: ফেরি খরচ কোথায় কত হবে?
উত্তর: ফেরি খরচ বলতে আলাদা আলাদা ফেরিতে আলাদা আলাদা রেট এবং এক দ্বীপ থেকে আরেক দ্বীপে যেতে টিকিটের ভাড়াও আলাদা। যদিও সরকারি কিছু ফেরি আছে যা স্থানীয় মানুষদের জন্যেই বেশিরভাগ বুক থাকে আর এর জন্যে দিন তিনেক আগে থেকে বুক করতে হয়। এই সরকারি ফেরিতে খরচ খুবই কম, তবে এর আশা না রাখা ভালো, তাই একটাই উপায় - বেসরকারি ফেরি সার্ভিস বুক করা। অনলাইনে অগ্রিম বুকিং করে নেওয়ায় ভালো।
আসলে এখানে ভালো দুটি বেসরকারি কোম্পানির ফেরি সার্ভিস আছে:
★ MAKRUZZ - Fully covered ship.
★Green Ocean Cruise - Open deck
এই দুটি ফেরিই খুব ভালো, তবে দুটির মধ্যে একটিতে বাইরের Deck closed আর অপরটিতে Deck open থাকার দরুন deck এ দাঁড়িয়ে সমুদ্র উপভোগ করতে করতে যেতে পারেন। তবে গরমের সময় হলে উল্টোটা করতে হবে।



এই দুটি কোম্পানির Cruise এর ভাড়া:
◆ পোর্ট ব্লেয়ার - হ্যাভলক: 1,400/- টাকা (এক পিঠের জনপ্রতি ভাড়া) - Economy class
◆ হ্যাভলক - নীল দ্বীপ: 1,100/- টাকা (এক পিঠের জনপ্রতি ভাড়া) -Economy class
◆ নীল দ্বীপ - পোর্ট ব্লেয়ার: 1,300/- টাকা (এক পিঠের জনপ্রতি ভাড়া) - Economy class.



প্রশ্ন: এখানে এই ফেরির খরচ ছাড়া আর কি কি পরিবহণ খরচ আছে?
উত্তর: পোর্ট ব্লেয়ার থেকে যে 3 টি দ্বীপ একসঙ্গে ঘুরতে যাবেন তার খরচ মাথাপিছু 500/- টাকা। এছাড়া বাইক/স্কুটি ভাড়া নিলে 500/- টাকা দিন প্রতি (পেট্রোল খরচ 200/- টাকা আলাদা)। এর বাইরে এক জায়গা থেকে আরেক জায়গায় পৌঁছাতে গাড়ি/অটো ভাড়া বাবদ পুরো ট্যুরে জনপ্রতি 300/- টাকা ধরতে হবে।


প্রশ্ন: এখানে খাওয়ার খরচ কেমন?
উত্তর: জনপ্রতি প্রতিদিন নর্মাল খাবার খেলে এক একজনের 500/- টাকা মত খরচ হবে। এবারে আপনি স্পেশ্যাল কিছু ডিশ যেমন; স্পেশ্যাল সি-ফুড নিলে সেগুলো আলাদা খরচ ধরতে হবে।

প্রশ্ন: তাহলে মোটামুটি সব খরচই বলা হয়ে গেছে?
উত্তর: না, এখনও আপনার খরচ কিছু বাকি আছে। প্রথমত আপনি যেখানে যাবেন সেই জায়গার এন্ট্রি ফি হিসাবে পুরো ট্যুরে 400/- টাকা জনপ্রতি ধরে রাখুন। এছাড়া ওয়াটার এক্টিভিটি যেমন স্কুবা ডাইভিং (4,000/- টাকা) বা স্নোরকেলিং (2,000/- টাকা) করলে সেটা আলাদা খরচ। তবে এই ওয়াটার এক্টিভিটির নির্দিষ্ট কোনো রেট নেই আপনি যতটা বার্গেইন করতে পারবেন ততটা কমবে। সুতরাং এই খরচ প্রত্যেকের আলাদা আলাদা হবে। যাঁরা এগুলো করবেন না তাঁদের এই খরচ বেঁচে যাবে।


আন্দামান ভ্রমণের যে প্লান দিলাম সেখানে আরও একদিন বাড়িয়ে পোর্ট ব্লেয়ার থেকে Baratang যেতে চাইলে জনপ্রতি প্যাকেজ আছে 2,000/- টাকার মত। এটাও আমার মতে ঘুরে আসা উচিত। একদিন বেশি সময় থেকে এটা ঘুরে নিলে মনে কোনো দ্বিধা থাকবে না। সব কিছুই কভার হয়ে যাবে। তখন সেই ট্যুর হবে 6 রাত্রি 7 দিনের।



প্রশ্ন: তাহলে সস্তা ট্যুর কোথায় হল?
উত্তর: সস্তা বলতে নিজে ঘুরলে নিজের মত হোটেল নিলেন, গাড়ির বদলে অটো চড়লেন, ইকোনমি ক্লাসে ফেরিতে গেলেন, হোটেলের ক্লাস কমিয়ে দিলেন এতেই যেটুকু খরচ কমবে। কিন্তু কিছু খরচ আছে যা সবার জন্যে প্রায় একই যেমন; ফেরি সার্ভিস, বিমান ভাড়া এবং খাওয়া দাওয়া এগুলোতে মোটামুটি একই হবেই। তবে নিজেরা গেলে আপনাকে অনেক কিছু অগ্রিম বুক করতে হবে। সেটা করতে না চাইলে ট্যুর অপারেটর কলকাতা বা পোর্ট ব্লেয়ারে অসংখ্য পেয়ে যাবেন তাঁদের হেল্প নিতে পারেন। তবে আন্দামান ট্যুর কিন্তু ঐ পাঁচ - দশ হাজার টাকায় হবে না, এই ট্যুর জীবনে একবারই করবেন তাই খরচ আপনার অনেকটাই হবে এই ভেবেই প্লান করুন। আগেই সব খরচের Break-up দিয়ে দিয়েছি আপনারা নিজেরা হিসেব করে নেবেন কত খরচ হতে পারে।



প্রশ্ন: হোটেল ছাড়া আর কোনো ব্যবস্থা আছে যেখানে থাকলে এই খরচ কিছুটা কমবে?
উত্তর: অবশ্যই আছে কিছু হলিডে হোম, কিছু কম টাকার সস্তার লজ এবং সবথেকে ভালো রামকৃষ্ণ মিশনের আবাসন, এইসব জায়গায় থাকলে রাত্রি বাসের জন্যে যে খরচ সেটা অনেকটাই কমে যায়।



প্রশ্ন: একটু মিডিয়াম রেঞ্জের হোটেল এর নাম দেবেন?
উত্তর: সাধারণত হোটেলের নাম আমি দিই না, কারণ হোটেল নিয়ে সবার আলাদা আলাদা পছন্দ। তবুও আপনাদের সুবিধার্থে আমি দুই একটা করে নাম বলে দিচ্ছি।
পোর্ট ব্লেয়ার: Amina Lodge, Blue Bridge Home, Guru International , Park Inn....
তবে আমি বলবো রামকৃষ্ণ মিশনে থাকুন সস্তা হবে সাথে লোকেশনও সবচেয়ে ভালো।
হ্যাভলক: Radha Krishna Resort, Shangri-La's beach resort...এছাড়াও অনেক ভালো হোটেল আপনি পেয়ে যাবেন।
নীল দ্বীপ: Blue lagoon Resort, Coco-N-Huts beach resort....এছাড়াও অনেক ভালো হোটেল আপনি পেয়ে যাবেন।
এইসব হোটেল বা রিসোর্ট বুক করতে হলে সরাসরি গুগলে সার্চ করে ফোন নাম্বার নিয়ে বুক করে নেবেন। তাছাড়া হোটেল বুকিং এর বিভিন্ন Apps থেকেও বুকিং ও হোটেলের ট্যারিফ আপনারা পেয়ে যাবেন।



প্রশ্ন: রামকৃষ্ণ মিশন এর যে থাকার ব্যবস্থা আছে ববলছেন, সেটা কিভাবে বুক করবো?
উত্তর: রামকৃষ্ণ মিশন পোর্ট ব্লেয়ারে থাকার জন্যে ভালো ব্যবস্থা আছে, তবে খাবার বাইরে থেকে কিনে খেতে হবে। সস্তার মধ্যে সবচেয়ে ভালো এই রামকৃষ্ণ মিশনে থাকা। বুক করতে হলে সরাসরি মেইল করুন:
portblairrkm@gmail.com.
যোগাযোগ: 03192232432
তবে সবচেয়ে ভালো একটা খোঁজ দিচ্ছি। এই রামকৃষ্ণ মিশনের সঙ্গে 3 জন বিশ্বস্ত ট্যুর অপারেটর আছেন, যাঁরা আপনার পুরো প্যাকেজ ও থাকার জায়গা সবকিছু Arrange করে দেবেন। তবে সেই 3 জনের নাম ও যোগাযোগের নাম্বার তখনই পাবেন, যখন আপনি পোর্ট ব্লেয়ারের রামকৃষ্ণ মিশনে থাকবার জন্যে রুম বুক করবেন। আর সেক্ষেত্রে উপরে দেওয়া Mail Address এ আপনার সমস্ত তথ্য দিয়ে মেইল করবেন। আশা করা যায় রামকৃষ্ণ মিশনের মাধ্যমে পুরো প্যাকেজ করলে কিছুটা সস্তা তো হবেই সাথে ঠকবার ভয় নেই।



প্রশ্ন: বেসরকারি ফেরি সার্ভিস যেগুলো আছে সেগুলো কিভাবে বুক করবো?
উত্তর: দুই রকম ফেরি সার্ভিস আছে। বুকিং করার জন্যে তাদের নিজস্ব ওয়েবসাইট নীচে দেওয়া হলো।
এছাড়া টিকিট বুকিং করার জন্যে অন্য একটি ওয়েবসাইট হলো: https://ferrybooking.in/green-ocean-ferry-ticket-booking/
আশা করি, আন্দামান ট্যুর নিয়ে আপনাদের মনে আর কোনো প্রশ্ন নেই। তবুও আরোও কিছু জানতে হলে কমেন্ট করে জানাবেন। সময়মতো সবার প্রশ্নের সব উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করবো।
★ কোনোরকম হোটেলের প্রমোশন আমরা করছি না, শুধুমাত্র আপনাদের সুবিধার্থে এই নাম ও অন্যান্য যোগাযোগ এর সন্ধান দেওয়া হলো।



পোস্টটি ভালো লাগলে অবশ্যই আপনার টাইমলাইনে শেয়ার ও সেভ করে রাখুন।
এছাড়া আপনারা Follow করতে পারেন:

© বাঙালির বেড়ানো।